❝ জাহান্নামের দরজা ❞
জাহান্নামের দরজা! নাম শুনেই আঁতকে উঠেছেন
নিশ্চই। এবার যদি বলি এই দরজা পৃথিবীতেই
কোথাও অবস্থিত তখন কি বলবেন! নাহ, ভয় পাবার
কিছু নেই। এই দরজা আসল জাহান্নামের নয়। সেটা
কিরূপ হতে পারে তা মানুষের ধারণার বাইরে। তবে
তুর্কমেনিস্তানের কারাকুম প্রদেশের দারবাজা গ্রামে
এমনই একটি জলন্ত গর্ত আছে যা দেখলে আপনিও
হটাৎ জাহান্নামের দরজা ভেবে ভুল করতে পারেন।
আসগাবাদ থেকে ২৬০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত
দারবাজা অঞ্চলটি ছিল প্রাকৃতিক গ্যাস সমৃদ্ধ।
১৯৭১ সালে সোভিয়েত ভূতত্ত্ববিদগণ প্রথম এখানে
প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পান। গ্যাসের পরিমাণ ও
আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য তারা সেখানে
খোঁড়াখুঁড়ি করছিলেন। অকস্মাৎ সেখানে ভূমিধ্বস
সংঘটিত হয় এবং প্রায় সাথে সাথেই ৭০ মিটার
গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়। মাটি খোঁড়ার যন্ত্রপাতিসহ
বিজ্ঞানীদের তাবু তাৎক্ষণিকভাবে গর্তে চলে যায়।
সৌভাগ্যবশত সেখানে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। কিন্তু
গর্ত থেকে এতো ব্যাপক পরিমাণে মিথেন গ্যাস বের
হচ্ছিল যে, তা আশেপাশের এলাকার মানুষের
স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর ছিল। তাছাড়া পরিবেশ
দূষণের ব্যাপারটা তো ছিলই।
প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন গ্যাসের
পরিমাণ খুব বেশি হবে না। তাই পরিবেশ দূষণ রোধ
করতে তারা দ্রুত সেই গর্তের সকল গ্যাস নিঃশেষ
করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গর্তের
গ্যাসে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু সবাইকে অবাক
করে দিয়ে সেই আগুন আর নেভেনি, ৪৬ বছর যাবত
তা জ্বলছেই! তবে ২০১০ সালে তুর্কমেনিস্তান
প্রেসিডেন্ট স্থানটি পরিদর্শন করেন এবং সেখানে
আগুন নিভিয়ে গ্যাস উত্তোলনের কথা বলেন। তবে
সাত বছর পর আজও কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ
চোখে পড়ে না। বরং বিশেষজ্ঞরা বলছেন- এটি বন্ধ
করা এতো সোজা হবে না। সে যাই হোক, চার
দশকের অধিক সময় ধরে জ্বলতে থাকা এই গ্যাসের
গর্তটি এখন বিশ্বজুড়ে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য একটি
আকর্ষণীয় জায়গা হয়ে উঠেছে।
